কক্সবাজার পৃথিবীর দীর্ঘতম সমুদ্র সৈকত তথা বাংলাদেশের অন্যতম জনপ্রিয় পর্যটন কেন্দ্র। বাংলাদেশের দক্ষিণ পূর্বাঞ্চলের এই থানা শহরটি চট্টগ্রাম বিভাগের কক্সবাজার জেলার প্রধান শহর হিসেবে বিবেচিত হয়। পৃথিবীর সবচাইতে দীর্ঘ সমুদ্র সৈকত এখানেই অবস্থিত। সৈকতটি কক্সবাজার থেকে বদরমোকাম পর্যন্ত একটানা ১৫৫ কিলোমিটার পর্যন্ত বিস্তৃত। এছাড়া এখানে আছে বৃহত্তম সামুদ্রিক মৎস্য বন্দর এবং সাবমেরিন ক্যাবল ল্যান্ডিং স্টেশন।
অনেক আগে একসময় কক্সবাজারের নাম ছিল পালংকি। ১৭৭৩ সালে ব্রিটিশ ইস্ট ইন্ডীয়া কোম্পানি অধ্যাদেশ জারী হবার পর হিরাম কক্স নামক একজন ইংরেজ সাহেবকে পালংকির মহাপরিচালক নিযুক্ত করা হয়। তিনি কক্সবাজারের উন্নয়নের জন্যও অনেক উদ্যোগ গ্রহন করেন। পরবর্তীতে উনার উনার মৃত্যুর পর উনার নামানুসারে কক্সবাজার নামকরন করা হয়। বাংলাদেশের তথা উপমহাদেশের অন্যতম প্রধান পর্যটন আকর্ষণ কক্সবাজার সমুদ্র সৈকত। প্রতি বছর অসংখ্য মানুষ বাংলাদেশ সহ পৃথিবীর বিভিন্ন দেশ থেকে এই দীর্ঘতম সমুদ্র সৈকত উপভোগ করতে আসেন। বিদেশী পর্যটক তো বটেই, বাংলাদেশের বেশিরভাগ পর্যটকে ঢাকা এবং চট্টগ্রাম হয়ে কক্সবাজার আসতে হয়।
ঢাকা কক্সবাজার ভ্রমণ – সড়ক পথ
ঢাকা কক্সবাজার ভ্রমণ করার সবচাইতে প্রচলিত পদ্ধতি হচ্ছে সড়ক পথ। দেশের সব বিখ্যাত পরিবহন সংস্থাই ঢাকা কক্সবাজার রুটে তাদের বিলাস বহুল বাস সার্ভিস পরিচালনা করছে। ঢাকা থেকে কক্সবাজারের দূরত্ব ৪১৪ কিলোমিটার। ঢাকা থেকে বাসগুলো ছেড়ে প্রথম চট্টগ্রাম আসে। এর পর চট্টগ্রাম থেকে আরও ১৫২ কিলোমিটার পথ পাড়ি দিয়ে কক্সবাজার পৌছায়। স্বাভাবিক সময়ে ঢাকা কক্সবাজার ভ্রমণ শেষ করতে আপনার সময় লাগবে ১০-১২ ঘণ্টা। ঈদ, পুজা, নববর্ষ বা ঐ জাতীয় কোন উপলক্ষের ক্ষেত্রে পর্যটকদের চাপ দ্বিগুণ হয়ে যায়। তখন স্বাভাবিক ভাবেই ট্রাফিক জ্যামের সৃষ্টি হয় এবং সময় বেশী লেগে যায়। ঈদের মৌসুমে অনেক সময় কক্সবাজার ভ্রমণ শেষ করতে ১৫-১৮ ঘণ্টা সময়ও লেগে যায়।
ঢাকা কক্সবাজার ভ্রমণ – রেলপথ
রেলপথেও ঢাকা কক্সবাজার ভ্রমণ করা সম্ভব। তবে সেক্ষেত্রে আপনাকে একটু বেশী ঝামেলা পোহাতে হবে। ঢাকা থেকে প্রথমে চট্টগ্রাম যেতে হবে ট্রেনে। চট্টগ্রাম নেমে আবার চট্টগ্রাম- কক্সবাজারের বাস নিতে হবে। এক্ষেত্রে সময় বেশী লাগার পাশাপাশি পরিবহন পরিবর্তনের একটা আলাদা ঝামেলা আপনাকে পোহাতে হবে।
ঢাকা কক্সবাজার ভ্রমণ – আকাশপথ
ঢাকা কক্সবাজার ভ্রমণ করার সবচাইতে আরামদায়ক এবং দ্রুত উপায় হল আকাশ পথে ভ্রমণ করা। বাংলাদেশের মোট আভ্যান্তরিন যাত্রি পরিবহনের ক্ষেত্রে আকাশ পথে ঢাকা কক্সবাজার রুট অন্যতম জনপ্রিয় এবং চাহিদা সম্পন্ন। এই রুটে প্রতিদিন বিভিন্ন বিমান সংস্থা দ্বারা ৭-৮ টি ফ্লাইট পরিচালিত হয়। ঢাকা কক্সবাজার রুটে আকাশ পথে গেলে আপনাকে ৩০৬ কিলোমিটার পথ অতিক্রম করতে হবে। যাত্রা পথে সময় লাগবে ৫৫ মিনিট থেকে ১ ঘণ্টা গড়ে। বিমান গুলো ঢাকার হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমান বন্দর থেকে উড্ডয়ন করবে এবং ১ ঘণ্টার মধ্যে কক্সবাজার বিমানবন্দরে আপনাকে পৌঁছে দিবে।
বিমান বাংলাদেশ এয়ারলাইন্স সপ্তাহে ৬ টি ফ্লাইট দিচ্ছে কক্সবাজার রুটে
দেশের সব কয়টি বিমান সংস্থা তাদের বহু সংখ্যক ফ্লাইট বরাদ্দ রেখেছে ঢাকা কক্সবাজার রুটে। যে এয়ারলাইন্স গুলো এখন ঢাকা কক্সবাজার রুটে ফ্লাইট পরিচালনা করতেছে তারা হলঃ
এর মধ্যে নভোএয়ার, রিজেন্ট এয়ারওয়েজ, ইউ এস এয়ারলাইন্স প্রতিদিনই ঢাকা কক্সবাজার ফ্লাইট পরিচালনা করে থাকে। নভোএয়ার সপ্তাহে ২৮ টি, ইউ এস বাংলা এয়ারলাইন্স ১৪ টি, রিজেন্ট এয়ারওয়েজ ৭ টি ও বিমান বাংলাদেশ ৫ টি ফ্লাইট পরিচালনা করে থাকে। এছাড়া বাংলাদেশ বিমান ঢাকা কক্সবাজার রুটে আরও একটি কানেক্টিং ফ্লাইট (ভায়া চট্টগ্রাম) পরিচালনা করে থাকে।
নভোএয়ার ঢাকা কক্সবাজার রুটে সর্বচ্চ সংখ্যক ফ্লাইট পরিচালনা করে